প্রতিবন্ধী ভাতা পাবার জন্য অবশ্যই প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করতে হবে ও সঠিকভাবে প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। বর্তমানে পূর্বের ন্যায় ঝামেলা ও কোন ভোগান্তি ছাড়াই ঘরে বসে মোবাইল বা কম্পিউটারের মাধ্যমে অনলাইনে প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন করা যায়। পরবর্তীতে উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে সততা যাচাই করার পর সরাসরি মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট এর মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান করা হয় । আজকের এয়ার টিকিটের মাধ্যমে আজ আমরা আপনাকে প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন সম্পৃক্ত সকল তথ্য জানাবো যার ফলে আপনি কোন ভোগান্তি ছাড়াই ঘরে বসেই প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন সম্পন্ন করতে পারেন।
প্রতিবন্ধী ভাতা কি
জন্মের সময় হতে কিছু মানুষ আর শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে থাকেন। বাংলাদেশ সরকার শারীরিকভাবে অক্ষম নাগরিকের পাশে থাকার জন্য প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার প্রকৃত ও প্রতিবন্ধী বাছাই করার পর সরাসরি তার মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে প্রতিবন্ধী ভাতা প্রেরণ করছেন। প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার জন্য বেশ কিছু জগতে থাকতে হবে উক্ত ব্যক্তির।
প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য আবেদনের যোগ্যতা
যে সকল ব্যক্তি প্রতিবন্ধী রয়েছেন তাদের অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নির্দেশনা বাংলাদেশ সরকার অপমান করেছেন না যার মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবেন। নিন্মে সুবিন্যস্তভাবে আবেদনের যোগ্যতা সমূহ উপস্থাপন করা হয়েছেঃ
- ২০১৩ সালের নীতিমালা অনুযায়ী সমাজসেবা কার্যালয় হতে অবশ্যই প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষায় নিবন্ধন এবং পরিচয় পত্র সংগ্রহ করতে হবে নতুবা উক্ত ব্যক্তি প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হবেন না।
- প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে তার স্থায়ী ঠিকানা অনুযায়ী নিজ জেলা থেকে সমাজসেবা কার্যালয় থেকে প্রতিবন্ধী পরিচয় পত্র এ নিবন্ধন করতে হবে ও পরিচয় পত্র সংগ্রহ করতে হবে।
- যদি কোন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির বার্ষিক আয় প্রতিবন্ধী ভাতার নীতিমালার ঊর্ধ্বে হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তি প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য অনলাইন আবেদন করতে পারবেন না।
- কেবলমাত্র আর্থিকভাবে অসচ্ছল/গরিব/ নিঃস্ব প্রতিবন্ধী ব্যক্তি কেবলমাত্র “প্রতিবন্ধী ভাতা আবেদন” করতে পারবেন অনলাইনের মাধ্যমে।
- অবশ্যই উক্ত প্রতিবন্ধী ব্যক্তির বয়স ন্যূনতম ৬ বছর অধিক হতে হবে।
- অবশ্যই প্রতিবন্ধী ভাতার ক্ষেত্রে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কিংবা পৌরসভার মেয়রের সুপারিশ থাকতে হবে।
প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপ্তির অযোগ্যতা
প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার জন্য যেমন যোগ্যতা রয়েছে তেমনি প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু অযোগ্যতা রয়েছে যার উপর ভিত্তি করে প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদনটি বাতিল হয়ে যায়।এ সকল কারণের মধ্যে রয়েছে:
- যদি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি পেনশন বউকে সরকারি কর্মচারী কিংবা সরকারি কর্মচারী হলে সে ক্ষেত্রে সে প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপ্তির যোগ্যতা হারাবে।
- প্রতিবন্ধী ব্যক্তি যদি বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আর সরকারি অনুদান লাভ করেন সেক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ভাতা প্রাপ্তির যোগ্যতা হারাবে।
- আবার কোন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি যদি বেসরকারি সংস্থা কিংবা সরকারি যেকোনো সংস্থা থেকে আর্থিকভাবে অনুদানের পেয়ে থাকেন প্রতিনিয়ত সেক্ষেত্রে তিনি সরকার কর্তৃক প্রধান কৃত প্রতিবন্ধী ভাতা পাবেন না।
প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র
প্রতিবন্ধী ভাতা লাভ করার জন্য বেশ কিছু ডকুমেন্টস বা নথি পত্রের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে যে সকল নথিপত্র প্রয়োজন হবে এর মধ্যে রয়েছে:
- প্রতিবন্ধী ব্যক্তির বয়স যদি ১৮ বছরের কম হয় সেক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন প্রদান করতে হবে ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তির বয়স যদি ১৮ বছরের বেশি হয় সে ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন হবে।
- প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পরিচয় পত্র বা সুবর্ণ নাগরিক কার্ড প্রয়োজন হবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পরিচয় পত্র বা সুবর্ণ নাগরিক কার্ড এটা সমাজসেবা অধিদপ্তরের কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করতে হবে।
- একটি সচল মোবাইল নম্বর প্রয়োজন হবে অবশ্যই উক্ত নম্বরে বিকাশ একাউন্ট বা নগদ একাউন্ট থাকতে হবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির নামে।
- স্থানীয় চেয়ারম্যান কিংবা পৌরসভার কাউন্সিলের সুপারিশকৃত স্বাক্ষর সহ ডকুমেন্টটি সংগ্রহ করতে হবে।
- অনলাইনে আবেদন করার পর আবেদন ফরমটি অবশ্যই ডাউনলোড ও প্রিন্ট করে রাখতে হবে।
এবার তবে প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম
প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন অনলাইনে করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়মাবলী ও ধাপ অনুসরণ করতে হয়। এ সকল ধাপ সমূহ নিম্নে সুবিন্যস্ত ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছেঃ
সমাজসেবা অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। যেকোনো ব্রাউজার থেকে (http://mis.bhata.gov.bd/onlineApplication) এ প্রবেশ করুন। উক্ত লিংকে প্রবেশ করার পর নিম মেয়ে ছবির মত একটি পেজ আপনার সামনে প্রদর্শিত হবে অবশ্যই তখন ” প্রতিবন্ধী ভাতা” নির্বাচন করতে হবে।
ফর্মে উল্লেখিত প্রথম বক্সে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর লিখুন ও পরবর্তী বক্সে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্মতারিখ বাছাই করুন। জন্মতারিখ বাছাই করার পর অবশ্যই “যাচাই করুন” বাটনে প্রেস করতে হবে।
“যাচাই করুন” বাটনে প্রেস করার পর পরবর্তী পেজে আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন থেকে স্বয়ংক্রিয় ভাবে তথ্য পূরণ হয়ে যাবে। তবে বেশ কিছু তথ্য অবশ্য আপনাকে পূরণ করতে হবে। তবে অবশ্যই আপনি এ সকল তথ্য সাবধানতার সাথে পূরণ করবেন ও সকল তথ্য অবশ্যই সত্য হতে হবে অবশ্যই সত্য হতে হবে। যদি আপনার তথ্য সঠিক না হয়ে থাকে তাহলে পরবর্তীতে আইনী জটিলতার সম্মুখীন হতে পারেন।
যে সকল তথ্য অতিরিক্তভাবে আপনাকে পূরণ করার প্রয়োজন হবে এ সকল তথ্যের মধ্যে রয়েছে: প্রতিবন্ধী ব্যক্তির শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির বৈবাহিক অবস্থা, বর্তমান বাসস্থানের তথ্য, বর্তমান পেশা, বর্তমানে পরিবারের সদস্য সংখ্যা, জমির পরিমাণ, বেসরকারি বা আর্থিক সুবিধার তথ্য, শারীরিক বা স্বাস্থ্যগত কর্মক্ষমতার সংক্রান্ত তথ্য, বার্ষিক আয়,প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ধরন (অবশ্যই ডিআইএস তথ্য অনুযায়ী প্রদান করতে হবে), প্রতিবন্ধী ব্যক্তির প্রতিবন্ধীর মাত্রা কত অবশ্যই প্রদান করতে হবে তবে এই তথ্য অবশ্যই ডিআইএস অনুযায়ী প্রদান করতে হবে।
পঞ্চম ধাপে চোখের তথ্য প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে আবেদনকারী প্রতিবন্ধীর ঠিকানা মোবাইল নম্বর (অবশ্যই বিকাশ বা নগদ একাউন্ট থাকতে হবে), উক্ত মোবাইল নম্বরটি কার এটি উল্লেখ করতে হবে, যদি প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ইমেইল ঠিকানা থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই প্রদান করতে হবে।
সকল ধাপসমূহ যথাযথভাবে পুরনো করা হয়ে গেলে অবশ্যই তথ্যসমূহ পুনরায় যাচাই করে নিন যাতে কোন ভুল তথ্য প্রদান না করা হয়। সকল তথ্য এক নজরে দেখে নেওয়ার পর ভুল থাকলে সংশোধন করুন ও সকল তথ্য যদি সঠিক থাকে তাহলে “সংরক্ষণ” বাটনের প্রেস করে আবেদনটি জমা দিন।
তবে অবশ্যই একটি বিষয়ে মাথায় রাখতে হবে যে আবেদের ফর্মটি “সংরক্ষণ” বাটনে প্রেস করার পর আর পরিবর্তন করা যাবে না।
প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইনে আবেদন করার শেষ পর্যায় আবেদনটি জমা দেওয়া হলে আপনার সামনে তথ্য প্রিন্ট করার অপশন আসবে। আপনি চাইলে এই আবেদনটি প্রিন্ট করে নিতে পারেন কিংবা PDF ফাইল আকারে আপনার কাছে সংরক্ষণ করতে পারেন।
অতঃপর আপনার প্রিন্ট করা ফর্মটির নির্দিষ্ট অংশে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কিংবা পৌরসভার কাউন্সিলরের স্বাক্ষর গ্রহণ করে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে সকল প্রয়োজনীয় তথ্যসহ জমা দিতে হবে।
প্রতিবন্ধী ভাতা প্রতিমাসে কত টাকা
প্রতিবন্ধীদের কিছুটা আর্থিক সাহায্য করার জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধীদের প্রতিমাসে ৭৫০ টাকা ভাতা প্রদান করে থাকেন তবে বর্তমানে প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা বৃদ্ধি করে ৮৫০ টাকায় রূপান্তরিত করা হয়েছে। প্রতি তিন মাস পর পর প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মোবাইল ব্যাংকিং ঠিকানায় তিন মাসের মোট আভা দা প্রেরণ করা হয়।
প্রতিবন্ধী ভাতা আবেদনের শর্তাবলী
প্রতিবন্ধী ভাতা তাদের জন্যই যারা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল।সেহেতু বর্তমানে যারা বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে আর্থিকভাবে অনুদান লাভ করছেন ও বিভিন্ন ভাতা লাভ করছেন তারা প্রতিবন্ধী ভাতা আবেদনের উপযুক্ত নন। প্রতিবন্ধী ভাতা অবশ্যই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভেরিফিকেশন করার পর পরবর্তী সময়ে প্রতিবন্ধী ভাতা আবেদনটি অনুমোদন করা হয়।
যারা প্রতিবন্ধী ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার লাভ করবেন
বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু মানদণ্ডে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নির্বাচন করা হয়। যেমন:
- আবেদন করে ব্যক্তি যদি বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধী হয় সেক্ষেত্রে তিনি প্রতিবন্ধী ভাতা পাওয়ার জন্য অগ্রাধিকার লাভ করবেন।
- নারী প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়।
- ভূমিহীন বা গৃহহীন এমন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়।
- প্রতিবন্ধী ব্যক্তি যদি বয়স্ক হন সেক্ষেত্রে তিনি অগ্রাধিকার লাভ করবেন।
প্রতিবন্ধী ভাতা সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ
প্রতিবন্ধী ভাতা কত টাকা?
বর্তমানে প্রতিবন্ধী ভাতা ৮৫০ টাকা মাসিক। তবে প্রতি তিন মাস পর পর ২৫৫০ টাকা মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরে প্রদান করা হয়।
প্রতিবন্ধী ভাতা পেতে কি সুবর্ণ কার্ড লাগবে?
হ্যাঁ অবশ্যই প্রতিবন্ধী ভাতা পেতে অবশ্যই সুবর্ণ কার্ডের প্রয়োজন হবে। সুবর্ণ কার্ড প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পরিচয় প্রমাণের একমাত্র চিহ্নিতকরণ পরিচয় পত্র।
শেষ কথা
“প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন” বছরের সকল সময় গ্রহণ করা হয় না। বছরের নির্দিষ্ট সময় ভাতার আবেদন গ্রহণ করা হয়। এক্ষেত্র উক্ত নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে প্রতিবন্ধী ভাতার অনলাইন আবেদন করার জন্য অবশ্যই আপনার ইউনিয়ন পরিষদের সাথে যোগাযোগ রাখুন।
আরো জানতে পারেন: বয়স্ক ভাতা চেক করার নিয়ম ২০২৪