ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতি বছর রমজান মাসে সাদাকাতুল ফিতরার (ফিতরা) হার নির্ধারণ করে থাকে। ফিতরা হলো একটি বাধ্যতামূলক দান, যা ঈদুল ফিতরের নামাজের পূর্বে প্রদান করা হয়। ফিতরা আদায়ের মূল উদ্দেশ্য হলো রমজানের রোজা পালনের সময় কোনো ভুলত্রুটি হয়ে থাকলে তা পরিশুদ্ধ করা এবং সমাজের দরিদ্র ও অভাবী মানুষের ঈদের আনন্দে শরিক হওয়া নিশ্চিত করা।

ইসলামী শরিয়াহ্‌ অনুযায়ী, ফিতরা আদায়ের জন্য নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের পরিমাণ নির্ধারিত রয়েছে। এই পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে গম বা আটা, যব, খেজুর, কিশমিশ এবং পনির। প্রত্যেক পণ্যের নির্দিষ্ট পরিমাণ বা এর বাজারমূল্য অনুযায়ী ফিতরা আদায় করা যায়।

ফিতরা আদায়ের পণ্যের পরিমাণ ও বাজারমূল্য

পণ্যের নামপরিমাণবাজারমূল্য (টাকা)
গম বা আটা১.৬৫০ কেজি১১০
যব৩.৬০ কেজি৫৩০
খেজুর৩.৩০০ কেজি২,৩১০
কিশমিশ৩.৩০০ কেজি১,৯৮০
পনির৩.৩০০ কেজি২,৮০৫

উল্লেখ্য, ফিতরার হার নির্ধারণের সময় স্থানীয় বাজারমূল্যের তারতম্য বিবেচনা করা হয়। তাই, ফিতরা আদায়ের সময় স্থানীয় বাজারমূল্য অনুযায়ী পরিমাণ নির্ধারণ করা উচিত।

ফিতরা আদায়ের নিয়ম:

  • ফিতরা আদায়ের সময়: ঈদুল ফিতরের নামাজের পূর্বে ফিতরা আদায় করা উত্তম। তবে, রমজান মাসের যে কোনো সময় ফিতরা প্রদান করা যায়।
  • ফিতরা প্রদানের উদ্দেশ্য: ফিতরা আদায়ের মাধ্যমে সমাজের দরিদ্র ও অভাবী মানুষের মধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করা হয়।
  • ফিতরা প্রদানের উপায়: উপরোক্ত পণ্যগুলোর নির্দিষ্ট পরিমাণ সরাসরি প্রদান করা যেতে পারে, অথবা এর সমপরিমাণ নগদ অর্থ প্রদান করা যেতে পারে।

ফিতরা গ্রহণের যোগ্য ব্যক্তিবর্গ:

ফিতরা গ্রহণের জন্য নিম্নলিখিত ব্যক্তিবর্গ উপযুক্ত:

  • দরিদ্র ও অভাবী ব্যক্তি: যাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের সামর্থ্য নেই।
  • মিসকিন: যারা অত্যন্ত দরিদ্র এবং কোনো সম্পদ বা আয়ের উৎস নেই।
  • যাকাত সংগ্রহকারী: যারা যাকাত সংগ্রহ ও বিতরণের কাজে নিয়োজিত।
  • নতুন মুসলিম: যারা নতুনভাবে ইসলাম গ্রহণ করেছেন এবং আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে।
  • ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি: যাদের ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য নেই।
  • আল্লাহর পথে সংগ্রামকারী: যারা আল্লাহর পথে সংগ্রামে নিয়োজিত এবং আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন।
  • মুসাফির: যারা সফরে আছেন এবং আর্থিক সংকটে রয়েছেন।

ফিতরা আদায়ের গুরুত্ব:

ফিতরা আদায়ের মাধ্যমে সমাজের দরিদ্র ও অভাবী মানুষের মধ্যে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হয়। এটি মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সংহতি বৃদ্ধি করে এবং সামাজিক সমতা প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে। তাই, প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের উচিত ফিতরা আদায়ে সচেষ্ট হওয়া এবং সমাজের দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো।

ফিতরা আদায়ের মাধ্যমে আমরা আমাদের রোজার পূর্ণতা অর্জন করতে পারি এবং আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভ করতে সক্ষম হই। তাই, আসুন আমরা সবাই ফিতরা আদায়ে আন্তরিক হই এবং সমাজের দরিদ্র ও অভাবী মানুষের মুখে হাসি ফোটাই।

ফিতরা কত টাকা ২০২৫?

২০২৫ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত তথ্যমতে সর্বনিম্ন ১১০ টাকা ও সর্বোচ্চ ২,৯৮০ টাকা

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *