বয়স্ক ভাতা চেক করার নিয়ম জানেন কী? বয়স ভাতা চেক করা বর্তমান সময়ে খুব সহজ,পূর্বে বয়স্ক ভাতা চেক করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ ও চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের পিছনে ঘুরতে হতো কিন্তু প্রযুক্তির কল্যাণে এখন ঘরে বসেই বয়স্ক ভাতা চেক করা যায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আজ আমরা আপনাকে বয়স্ক ভাতা চেক করার নিয়ম ও বয়স্ক ভাতা সম্পর্কিত সকল তথ্য জানাবো।

বয়স্ক ভাতা কী?

গ্রামের ও শহরের দরিদ্র বৃদ্ধদের যে আর্থিক সুবিধা প্রদান করা সেটি বয়স্ক ভাতা হিসেবে পরিচিত। বয়স্ক ভাতার সুবিধা কেবল মাএ বাংলাদেশের দরিদ্র শ্রেণির মানুষের জন্য।

বয়স্ক ভাতা চেক করার জন্য যা প্রয়োজন

বয়স্ক ভাতা চেক করার জন্য প্রধানত ৩ ধরনের তথ্য প্রয়োজন হয়। এই ৩ ধরনের তথ্য প্রদান করে বয়স্ক ভাতা চেক করা যায়। যে সকল তথ্য প্রয়োজন হবে:

  • বয়স্ক ভাতার আবেদন ট্রাকিং নাম্বার (বয়স্ক ভাতার আবেদনের ফরমে দেওয়া রয়েছে।
  • জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার ( যে ব্যক্তি বয়স্ক ভাতার আবেদন করেছেন তার জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার)।
  • আবেদনের ধরন (বয়স্ক ভাতা) ।

এছাড়া বয়স্ক ভাতা চেক করার জন্য প্রয়োজন ইন্টারনেট সংযোগ থাকা একটি কম্পিউটার বা মোবাইল। এবার তবে বয়স্ক ভাতা চেক করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যাক। 

বয়স্ক ভাতা চেক করার নিয়ম

গ্রামীণ কিংবা শহরের যেকোনো পর্যায়ের দরিদ্র বয়স্ক ব্যক্তিদের বিশেষ এক ধরনের ভাতা প্রদান করা হয়। উক্ত ভাতাটি বয়স্ক ভাতা নামে পরিচিত। তবে বয়স্ক ভাতার আবেদনের পর থেকে প্রবীণদের চিন্তা থেকে থাকে তাদের বয়স্ক ভাতার আবেদনটি গ্রহণ করা হয়েছে কিনা। পূর্বে বয়স্ক ভাতা যে করার জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে কিংবা বিভিন্ন পর্যায়ে দীর্ঘ সময় ধরে ঘুরতে হতো।

তবে বর্তমানে ঘরে বসে মোবাইল ফোন কিংবা কম্পিউটারের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতা চেক করা যায়। বয়স্ক ভাতা চেক করার জন্য আপনাকে বেশ কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে। নিম্নে এই সকল ধাপ বিস্তারিত আকারে আলোচনা করা হয়েছে:

ধাপ ১: অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ

প্রথম ধাপে আপনাকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ওয়েবসাইট অর্থাৎ mis.bhata.gov.bd ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হবে। ওয়েবসাইটে ভিজিট করার সাথে সাথে নিচে উপস্থাপন করা ছবির মত একটি ইন্টারফেস আপনি দেখতে পাবেন।

বয়স্ক ভাতা চেক করার নিয়ম

ধাপ ২: ট্রাকিং আবেদনপত্র ফর্ম

ট্রাকিং আবেদনপএ ফরমে অবশ্যই সকল তথ্য নির্ভুলতার সাথে প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার যা করণীয়:

কার্যক্রম অপশনে “সিলেক্ট” বাটনে ক্লিক করার পর আপনার সামনে অনেকগুলি ভাতা আপনি বয়স্ক ভাতা অপশনটি সিলেক্ট করবেন।

বয়স্ক ভাতা চেক করার নিয়ম

পরবর্তী বক্সে আইডি নাম্বার যাচাই অর্থাৎ আপনাকে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর বা জন্ম নিবন্ধন এর নম্বর প্রদান করতে হবে। (উ ল্লেখ্য যে বয়স্ক ভাতার আবেদন করার জন্য যদি জাতীয় পরিচয় পত্র ফটোকপি প্রদান করে থাকেন এক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর প্রদান করতে হবে।

শেষ বক্সে ট্র্যাকিং নং  প্রদান করতে হবে এক্ষেত্রে বয়স্ক ভাতা আবেদন করার সময় আপনাকে একটি ডকুমেন্ট প্রদান করা হয়েছে বা আবেদনপত্র ফরম প্রদান করা হয়েছে, উক্ত কাগজে ট্র্যাকিং নং  উল্লেখ করা রয়েছে।

ধাপ ৩: বয়স্ক ভাতা চেক করার ফলাফল

যদি ফর্মের প্রদান করার সকল তথ্য সঠিক থাকে তাহলে আপনি ট্র্যাকিং  আবেদনপত্রে ক্লিক করার সাথে সাথে বয়স্ক ভাতার বর্তমান স্ট্যাটাস জানতে পারবেন। এক্ষেত্রে যে সকল তথ্যপ্রদর্শিত হতে পারে:

  • আপনার আবেদনটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
  • আপনার আবেদনটি গৃহীত হয়েছে।
  • আপনার আবেদনটিতে ভুল তথ্য প্রদান করা হয়েছে।
  • আপনার আবেদনটিতে সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে।
  • আপনার আবেদনের প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে ইত্যাদি।

আপনি যদি সঠিক তথ্য বয়স্ক ভাতার আবেদনপত্রের জন্য প্রদান করে থাকেন এক্ষেত্রে আপনার বয়স্ক ভাতা অবশ্যই গৃহীত হবে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বহু তথ্য প্রদান করার কারণে বয়স্ক ভাতা আবেদন বাতিল হয়ে যায় ও আবার কিছু কিছু সময় আবেদনপত্র সংশোধন হয়।

এই সকল বিষয় ছাড়াও, আপনার বয়স্ক ভাতার আবেদনটি যদি গৃহীত হয় সেক্ষেত্রে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে উক্ত বয়স্ক ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করা হবে। কর্মকর্তারা বয়স্ক ব্যক্তির সকল কাগজপত্র যাচাই করে বয়স্ক ভাতার তালিকায় তার নাম তালিকাভুক্ত করবেন এবং তালিকাভুক্ত করার কিছু মাসের মধ্যেই উক্ত বয়স্ক ব্যক্তি বয়স্ক ভাতা পাওয়া শুরু করবেন।

বয়স্ক ভাতা দেওয়ার তারিখ ২০২

বয়স্ক ভাতার সাধারণত প্রতি ৩ মাস থেকে ৬ মাস পর পর প্রদান করা হয়। গত অক্টোবর মাস থেকে বর্তমান নভেম্বর মাসে বয়স্ক ভাতা আর কার্যক্রম চালু রয়েছে। যারা এখনো বয়স্ক ভাতা পাননি তারা অপেক্ষা করুন কিছুদিনের মধ্যেই বয়স্ক ভাতা আর টাকা আপনার বিকাশ নম্বর অথবা নগদ নম্বরে প্রদান করা হবে।

বয়স্ক ভাতা চেক করা প্রয়োজন কেন?

বয়স্ক ভাতা চেক করার পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। যোমন:

  • বয়স্ক ভাতার সর্বশেষ আপডেট তথ্য জানা যায়।
  • কোন ভুল বা সংশোধনের প্রয়োজন হলে  তৎক্ষণাৎ সংশোধন করা যায়।
  • বয়স্ক ভাতা চেক করে দুশ্চিন্তা মুক্ত হওয়া যায়।

বয়স্ক ভাতা সংক্রান্ত প্রশ্ন সমূহ

বয়স্ক ভাতা সম্পর্কে অনেকেই বেশ কিছু তথ্য অনলাইনে অনুসন্ধান করে থাকেন এর মধ্যে জনপ্রিয় ৪টি প্রশ্ন হচ্ছে:

ট্রাকিং আইডি কিভাবে সংগ্রহ করবো?

বয়স্ক ভাতার আবেদনপএ জমা দেওয়ার সময়  ট্রাকিং আইডি প্রদান করা হয়। উক্ত ট্রাকিং আইডি ব্যবহার করে বয়স্ক ভাতার সকল তথ্য জানা যায়।

বয়স্ক ভাতার আবেদনে যদি ভুল হয় তাহলে কিভাবে সংশোধন করব?

বয়স্ক ভাতার আবেদনে যদি কোন ভুল হয় সেক্ষেত্রে বয়স্ক ভাতা চেক করার পর বয়স্ক ভাতা সংশোধন করার অপশন পাবেন।

বাংলাদেশে বয়স্ক ভাতা কত টাকা?

বাংলাদেশ বয়স্ক ভাতা হিসেবে প্রতিমাসে একজন বয়স্ক ব্যক্তি ৬০০ টাকা পেয়ে থাকেন ।

বয়স্ক ভাতা চেক করার জন্য কোন টাকা চার্জ আছে কি?

বয়স্ক ভাতা চেক করার জন্য কোন চার্জ প্রদান করতে হয় না। তবে আপনি যদি কম্পিউটার সার্ভিস সেন্টার থেকে বা কোনো কম্পিউটার সার্ভিস দোকান থেকে বয়স্ক ভাতা চেক করে থাকেন সে ক্ষেত্রে তিনি ৫ টাকা থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত চার্জ করতে পারেন।

শেষ কথা

বয়স্ক ভাতা চেক করা খুবই সহজ সেহেতু ঘরে বসেই মোবাইল বা কম্পিউটারের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতা চেক করুন। প্রত্যাশা করি আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আজ আমরা আপনাকে, বয়স্ক ভাতা চেক করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে পেরেছি। তবে বয়স্ক ভাতা ও বয়স্ক ভাতা চেক করার নিয়ম সম্পর্কিত  কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই আপনি আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন ।

আরো জানতে পারেন: মেডিকেল ভিসা করতে কি কি লাগে

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *