পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে। Documents for new passport

পাসপোর্ট করতে কি কি লাগবে! যদি আপনি নতুন একটি পাসপোর্ট তৈরি করতে চান তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমরা এই পোস্ট হইতে জানার চেষ্টা করব, পাসপোর্ট করতে কি কি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগে। অবশ্যই পুরো আর্টিকেল পড়ে যদি কোন কিছু বুঝতে সমস্যা হয়, তাহলে আমাদেরকে জানাবেন।

বর্তমান সময়ে আমাদের দেশ সহ সকল দেশের মানুষ বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন কাজে যেতে হয়। এর জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন হবে পাসপোর্ট। স্টুডেন্ট বা ব্যবসায়ী কাজের জন্য আপনি যদি অন্য কোন দেশের ভ্রমনে যান এক্ষেত্রে পাসপোর্ট জরুরী প্রয়োজন হবে। এটি ছাড়া কিন্তু আপনি ভিসা বা প্রবেশ অনুমতি পাবেন না সেই দেশের কর্তৃপক্ষ হতে।

পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে।

সাধারণত পাসপোর্ট করতে খুব বেশি কাগজপত্র প্রয়োজন হয় না। অল্প কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট প্রদান করে আপনি একটি পাসপোর্ট তৈরি করতে পারবেন। ৪৮ পাতা এবং ৬৪ পাতার বৈধ পাসপোর্ট প্রদান করে থাকে বাংলাদেশ সরকার। সাধারণ কিছু ডকুমেন্ট প্রদান করে একটি পাসপোর্ট তৈরি করতে পারবেন।

পড়াশোনার জন্য যদি দেশের বাহিরে যেতে চান! সর্বপ্রথম আপনাকে একটি পাসপোর্ট তৈরি করতে হবে। এর পরবর্তী যে দেশে আপনি পড়াশোনার জন্য যাবেন সে দেশে, অনুমতি প্রবেশপত্র বা ভিসা প্রয়োজন হবে। যেখানে উল্লেখ্য থেকে একটি তারিখ দেওয়া থাকবে। যেমন: ২ বছর , ৫ বছর, পরবর্তী সময়ে আপনাকে পুনরায় এটি রিনিউ করতে হবে।

এছাড়া তিন ধরনের ব্যক্তির জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রদান করে থাকে। শিশুদের পাসপোর্ট, প্রাপ্তবয়স্কদের পাসপোর্ট, সরকারি চাকরিজীবীদের পাসপোর্ট। তিন বিভাগের জন্য কিছুটা আলাদা এবং ভিন্ন ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে একটি পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য।

শিশুদের পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে।

শিশুদের পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে? যাদের এনআইডি বা জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, সেই সমস্ত ব্যক্তিদের কে শিশুর পাসপোর্ট হিসেবে গণ্য করা হবে! অর্থাৎ আপনি জন্ম নিবন্ধন দিয়ে একটি পাসপোর্ট তৈরি করতে পারবেন। যদি আপনার বয়স ১৮ বছর এর নিচে হয় এক্ষেত্রে অবশ্যই জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার করে পাসপোর্ট তৈরি করতে হবে। তবে অবশ্যই পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের (NID) কপি প্রয়োজন হবে।

এবং ১৮ থেকে ২০ এর মধ্যে বয়স হলে, ও জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলে সেটি দিয়েও আপনি পাসপোর্ট আবেদন করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে আপনার পিতা-মাতা এনআইডি কার্ডের ফটোকপি ব্যতীত আবেদন করা যাবে। চেষ্টা করবেন আপনার আইডি কার্ড সহ পিতা মাতার আইডি কার্ড সংযোজন করার।

শিশুদের পাসপোর্ট করতে যা যা লাগবে।

  • শিশুর অনলাইন জন্ম নিবন্ধন (ডিজিটাল কপি)
  • পিতা-মাতার NID কার্ডের ফটোকপি।
  • ই-পাসপোর্ট অনলাইনে আবেদন ফরম।
  • অনলাইনে আবেদনের কপি বা সামারি।
  • আবেদন ফি প্রদানের এ চালান রশিদ।
  • শিশুর সম্প্রতি তোলা 3R Size এর ছবি।

এই সমস্ত ডকুমেন্ট ব্যবহার করে শিশুর পাসপোর্ট তৈরি করতে পারবেন। আরো একটি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হতে পারে, (টিকা কার্ড) যদি এই কাজ প্রয়োজন হয় তাহলে নির্বাহী কর্মকর্তা আপনাকে অবগত করবে এই ডকুমেন্টটি প্রদান করার জন্য।

প্রাপ্তবয়স্কদের পাসপোর্ট করতে কি কি লাগবে।

প্রাপ্তবয়স্কদের অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র বা (NID) প্রয়োজন হবে। এটি ব্যতীত আপনি পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন না যদি আপনার বয়স ২০ এর উর্ধ্বে হয়ে থাকে। কেননা বিশ উর্ধ্ব হলে এখানে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যাতিত অন্য কোন ডকুমেন্ট ব্যবহার করা যাবে না। যেমন: জন্ম নিবন্ধন।

এবং এখানে পিতা মাতার এনআইডি ছাড়াও পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। অবশ্যই আপনারা জাতীয় পরিচয়পত্র থাকতে হবে এবং যেখানে আপনি বসবাস করতেছেন সেই জায়গার ,চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট , ও স্থানীয় ঠিকানা বিদ্যুৎ বিল এর কপি অথবা গ্যাসবিলের কপি প্রদান করতে পারেন।

প্রাপ্তবয়স্কদের পাসপোর্ট করতে যা যা লাগবে।

  • জাতীয় পরিচয়পত্র বা NID কপি।
  • ই-পাসপোর্ট অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন ফরম।
  • অনলাইনে আবেদন কপি বা সামারি।
  • স্থানীয় সরকার বিভাগের সার্টিফিকেট।
  • আবেদনকারী স্টুডেন্ট হলে, স্টুডেন্ট কার্ড।
  • আবেদনকারী চাকরিজীবী হলে, চাকরির কার্ড।
  • আবেদন ফি প্রদানের এ চালান রশিদ।
  • ব্যাক্তির তোলা সম্প্রতি তোলা 3R Size এর ছবি।

মোটামুটি এই সমস্ত ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র দিয়ে প্রাপ্তবয়স্কদের পাসপোর্ট তৈরি করা যাবে। এখানে আরো কিছু তথ্য সংযোজন করতে পারেন, যেমন: পিতা মাতার আইডি কার্ডের কপি। সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের পাসপোর্ট তৈরি করতে পিতামাতার আইডি কার্ডের কপি না হলেও চলবে।

তবে, আপনাকে অবশ্যই ইউনিয়ন পরিষদ অথবা মেয়র হতে একটি সার্টিফিকেট (চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট) গ্রহণ করতে হবে এবং সেটি পাসপোর্ট তৈরির জন্য প্রয়োজন হবে। স্থানীয় ঠিকানা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে যদি বিদ্যুৎ বিলের কপি বা গ্যাস বিলের কপি প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন।

সরকারি চাকরিজীবীদের পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে।

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে? এর উত্তর হল সাধারণ পাসপোর্ট আবেদনের ডকুমেন্ট এর চেয়ে, সরকারি কোনো চাকরিজীবী বা কর্মকর্তা পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করে এক্ষেত্রে তার আমি বেশ কিছু ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে।

সরকারি চাকরিজীবীদের পাসপোর্ট আবেদন করতে, দুটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে; NOC এবং GO অর্থাৎ No Objection Certificate এবং Government Order এই দুটি সার্টিফিকেটের মধ্যে যেকোনো একটি প্রয়োজন হবে সরকারি কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট তৈরির জন্য। এক নজরে দেখে নিতে পারেন কি কি লাগবে।

সরকারি চাকরিজীবীদের পাসপোর্ট করতে যা যা লাগবে।

  • জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি।
  • নাগরিক সনদপত্র (স্থানীয় ঠিকানা)
  • ই-পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন রেজিস্ট্রেশন।
  • অনলাইনে আবেদন কপি বা সামারি।
  • ব্যাংক ড্রাফট এর কপি।
  • GO তথা Government Order বা,
  • NOC তথ্য No Objection Certificate

এই সমস্ত ডকুমেন্ট ব্যবহার করে, সরকারি চাকরিজীবী পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবে। সাধারণত সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য তাদের পদ অনুযায়ী এই দুটি অর্ডার বা সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।

GO: কোন সরকারি কর্মকর্তা রাষ্ট্রীয় কোন কাজের জন্য দেশের বাহির করতে হয়! এক্ষেত্রে তার পাসপোর্ট আবেদনের জন্য প্রদান করা হবে Government Order যা পাসপোর্ট তৈরি করতে ব্যবহার করতে হবে।

NOC: কোন সরকারি কর্মকর্তা কর্মরত অবস্থায় দেশের বাহিরে যেতে চান তাহলে, তার মন্ত্রণালয় অথবা অধিদপ্তর হতে No Objection Certificate গ্রহণ করতে হবে যা পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে।

আশা করি বুঝতে পেরেছেন পাসপোর্ট করতে কি কি প্রয়োজন হয়। যদি কোন কিছু সমস্যা হয়ে থাকে অবশ্যই কমেন্টে আপনার মতামতের সঙ্গে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *